রাম্পুরা-ডেমরা রোডে সন্ধ্যার পর থেকেই স্বাভাবিক নিয়মে যানজট শুরু হয়, যা সারারাত স্থায়ী থেকে সকালে কিছুটা কমে আসে। এই রুটে যানজট যেন এক নিত্যদিনের দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।
আর মাঝে মাঝে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ দুর্ঘটনা সেই যানজটকে আরও দীর্ঘ ও অপ্রতিরোধ্য করে তোলে। আজ ১৪ সেপ্টেম্বর ভোরে এমনই একটি দুর্ঘটনা ঘটে ক্রিমোহনী ব্রিজে। অছিম পরিবহনের একটি বাস একটি সিএনজি অটোরিকশার উপর উঠে যায়। সংঘর্ষে সিএনজিটি একেবারে দুমড়ে-মচড়ে যায়—চাকা, ছাদ, দরজা সবকিছু চেপে বসে যায় বাসের নিচে। ঘটনাস্থলেই সিএনজিটি আটকে পড়ে, এবং সাধারণ মানুষ উদ্ধারে অক্ষম হয়ে পড়ে। আজকের ঘটনায় কেউ মারা গেছেন কিনা, তা এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
এই দুর্ঘটনার ফলে সকাল ১০টা পর্যন্ত পুরো রোডে যান চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।
গত ৮ সেপ্টেম্বর, সোমবার ডেমরা-রাম্পুরা রোডের মিরপাড়ায় অছিম পরিবহনের-ই আরেকটি বাসের সঙ্গে একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক ঘটনাস্থলেই নিহত হন। দুর্ঘটনার পর ট্রাকটি বাম পাশে কাত হয়ে পড়ে থাকে এবং চালকের লাশ ট্রাকের ভেতর আটকে যায়, যা সাধারণ মানুষ উদ্ধার করতে পারেননি এবং রক্তে রাস্তা ছড়িয়ে ছিলো যা বৃষ্টিতে আরো ভয়াবহ দৃশ্য তৈরি করে। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে লাশ উদ্ধার করে এবং বাকি কাজ সম্পূর্ণ করে।
যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রাফিক পুলিশ প্রতিনিয়ত এই পরিস্থিতি দেখলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে অফিসগামী মানুষ সহ শিক্ষার্থী, রোগী—সবাইকে প্রতিদিনই সময় ও অর্থের অপচয় সহ্য করতে হচ্ছে।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, যানজটের কারণে ডেমরার যাত্রীরা ঢাকায় প্রবেশের জন্য পর্যাপ্ত বাসও পাচ্ছেন না এ তীব্র জামের কারণে। অনেক সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাসে উঠতে পারছেন না যাত্রীরা।
বাধ্য হয়ে অনেকেই উবার ও পাঠাও ব্যবহার করছেন, যা বাড়তি খরচের চাপ তৈরি করছে। এই অতিরিক্ত ব্যয় সামলাতে গিয়ে কর্মজীবী মানুষের পরিবারেও পড়ছে আর্থিক সংকটের ছায়া।
এই রোডের বিকল্প হিসেবে যাত্রাবাড়ী রোড ব্যবহার করাও কঠিন, কারণ সেখানেও দীর্ঘ সময়ের যানজট যাত্রীদের জন্য নতুন দুর্ভোগ তৈরি করছে।
স্থানীয়দের দাবি, রাস্তায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা এবং বিকল্প রুটের কার্যকর ব্যবহার ছাড়া এই সমস্যা থেকে মুক্তি সম্ভব নয়।
মন্তব্য করুন